আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ থেকে ফেরার পথে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত রেজাউল করিম (২০) কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি যাত্রাবাড়ী জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদরাসায় দাওরা বিভাগে পড়তেন।
ডেঙ্গু পজিটিভ হওয়ায় অসুস্থ ছিলেন, তাই ডাক্তারের বিশ্রামের পরামর্শে ছুটি নিয়ে খিলগাঁওয়ে বোনের দেবরের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। পথে বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। এরপরই গুরুতর আহত হয়ে তার মৃত্যু ঘটে। রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে রেজাউলের লাশ নিতে এসে স্বজনরা এসব কথা বলেন।
রেজাউলের বোনজামাই জুয়েল মিয়া বলেন, ‘রেজাউল কখনই রাজনীতি করেনি। বাড়িতে হেফজ শেষ করে যাত্রাবাড়ীর কওমী মাদ্রাসাটিতে গত ২ বছর ধরে দাওরা শ্রেণিতে পড়ত। অসুস্থ থাকায় খিলগাঁও তার বেয়াইয়ের বাসায় যাওয়ার সময় বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ পড়তে নামে। এরপরই সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তার মৃত্যু হয়।’ তিনি বলেন, ‘নামাজ পড়ে ওই এলাকায় ছিল সে। টুপি পাঞ্জাবী দেখে হয়ত মনে করেছে জামায়াতের লোক।’
জুয়েল মিয়া আরও বলেন, রেজাউলের বাড়ি শেরপুরের নকলা উপজেলার নারায়ণখোলা পশ্চিম পাড়া গ্রামে। বাবা আব্দুল ছাত্তার কৃষক ও মা রেনুজা বেগম বাড়ি সামলান। দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে সে ছিল চতুর্থ। বোনেরা সবাই তার বড়। তার ছোট ভাই নুর মোহাম্মদ এলাকায় মাদরাসায় পড়ে।
পল্টন থানার ওসি সালাহউদ্দীন মিয়া বলেন, গুলিস্তানে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মাদ্রাসাছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় শনিবার একটি মামলা হয়েছে। নিহতের বোন ফারহানা আফরিন সুমি বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন। হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে তারা কাজ করছেন।
শুক্রবার শান্তি সমাবেশ শেষে ফেরার সময় ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য কামরুল ইসলাম এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের সমর্থকরা মারামারিতে জড়ায়। এ ঘটনার সময় গুরুতর জখম হয়ে মৃত্যুবরণ করেন রেজাউল করিম।