আমার বেশিরভাগ নাইট ডিউটি ছিল হাসপাতালের ভয়ংকরতম রাত। ফজর পর্যন্ত আমি এবং আমার ১ কলিগ অবিরাম ছুটে বেড়িয়েছি। ওয়ার্ডে পা দিয়েই একটা ডেড বডি।
অবিরাম রোগী আসছে শ্বাসকষ্ট নিয়ে। বেশিরভাগ রোগীর ফুসফুস ৩০-৬০% আক্রান্ত। অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৭০ থেকে ৮০ পার্সেন্ট। আইসিইউ তে অবিরাম কল যাচ্ছে কিন্তু ১০ বেডের ICU খালি হচ্ছে না। ১০ টি আইসিইউ কল পেন্ডিং।
রোগীর এটেনডেন্ট এর অসহায় আর্তনাদে রাতের বাতাস ভারী। তাদের কাকুতি মিনতি যত টাকা লাগে ডক্টর একটা আইসিইউ দিন। তাদের কাছে উল্টো ক্ষমা চাই; বোঝাতে পারিনা ওয়ার্ডে পনের লিটারের বেশি অক্সিজেন দেওয়া যায় না যেখানে পেশেন্টের দরকার ৬০-৭০ লিটার পার মিনিট অক্সিজেন। আমাদের অক্ষমতা, আমাদের অশ্রু কেউ দেখেনা।
চোখের সামনে স্যাচুরেশন পঞ্চাশে নেমে আসে, এতটা অসহায় আর কখনো লাগেনি নিজেকে। এমনকি ২০১৯ এ ডেঙ্গু মহামারীতে একা পেশেন্ট ম্যানেজ করার সময়ও না!! রাত তিনটার মধ্যে ১০-১২ ভর্তি!! ওয়ার্ডগুলো থেকে খবর আসে আমরা ফুললি অকুপাইড, কোন বেড খালি নেই। ভোরের দিকে আবার মৃত্যু। ইমার্জেন্সির সামনে অ্যাম্বুলেন্সের ভিড়।
সীমিত জনবল আর লজিস্টিকস নিয়ে আমরা এই করোনা ঝড়ের সামনে দাড়িয়ে আছি!অনেক সহকর্মী হারিয়েছে তার আপনজন।
১১ মাসের টানা লড়াইয়ে আমরা বিপর্যস্ত। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি!! মহান আল্লাহতালার কাছ থেকে সব কিছু পাওয়ার আশায়!
Facebook Comments