রাজধানীর নিউমার্কেটের পদচারী–সেতুর ঠিক নিচেই দেখা অনিকের সঙ্গে। জীবনের দুই যুগ এখানে পার করে দিয়েছেন মাদারীপুরের ছেলে অনিক । পার্থক্য শুধু একটাই, আগে সুর করে আপাদের ডেকে সাজগোজের পণ্য বিক্রি করতেন। করোনায় পুঁজি হারিয়ে এখন বেল্ট বিক্রি করছেন।
অনিক সোনারবাংলাকে বলেন, বেল্টের ব্যবসাটাও লকডাউনের ধাক্কায় শেষ হয়ে যায় কি না, সেই শঙ্কায় আছেন। এই শঙ্কা থেকেই নিউমার্কেট এবং এর সংলগ্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তিনিও বিক্ষোভে নেমেছিলেন। বেলা আড়াইটা থেকে তাঁরা নিউমার্কেটের সামনের রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। একপর্যায়ে বিচ্ছিন্নভাবে দু–একটি গাড়িও ভাঙচুর করেন তাঁরা। পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন সোনারবাংলা কে বলেন, পেটের দায়ে ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।কিছুক্ষণের মধ্যে নিউমার্কেট, নিউ সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা, গাউছিয়া, চাঁদনিচকসহ আশপাশের বিপণিবিতানের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা রাস্তায় নেমে আসেন। কেউ কেউ উত্তেজিত হয়ে সামান্য ভাঙচুরও করে বসেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যসংখ্যা প্রায় ৫০০। সমিতি বলছে, নিউমার্কেটের ভেতরে তৈরি পোশাক, স্টেশনারি, ঘড়ি, খেলনা, অলংকারসহ বিভিন্ন জিনিসের সাড়ে তিন শতাধিক দোকান রয়েছে। এর বাইরেও ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা আছেন। ব্যবসায়ী–কর্মচারীর সংখ্যা আড়াই হাজারের বেশি। তাঁদের ওপর নির্ভরশীল সদস্যদের ধরলে আরও প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
এই পরিস্থিতিতে ঠিক কী চাইছেন, জানতে চাইলে দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘দেখুন, লকডাউন দিলে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন দিতে হবে। কিন্তু সরকার কোনো কোনো খাতকে ছাড় দিচ্ছে। এতে লকডাউনের যে উদ্দেশ্য, তা ব্যাহত হবে। সরকার শিল্পকারখানা খোলা রাখতে বলেছে। দোকানপাট বন্ধ থাকলে উৎপাদিত পণ্য তারা কার কাছে বিক্রি করবে?’
লকডাউনে দোকান বন্ধ রাখতে নারাজ রাজধানীর নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা। প্রয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে চলার শর্তে দোকান খোলা রাখতে চান তাঁরা।
Facebook Comments