একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা পাস করলেন মা-ছেলে। ফলাফলে মা লিপি আক্তার হাসি (৪০) পেয়েছেন জিপিএ-৪.৫৪ এবং ছেলে লিয়াকত হোসেন হৃদয় (১৬) পেয়েছে জিপিএ-৫। এমন সাফল্যে সবার প্রশংসায় ভাসছেন মা-ছেলে।
জানা যায়, ছোট থেকেই লিপি আক্তারের স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করার। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায় দারিদ্রতা। এসএসসি পাসের আগেই ২০০২ সালে উপজেলার সোনাপুর গ্রামের লোকমান হোসেনের সঙ্গে শুরু হয় তার সংসার জীবন।
পরে দুই মেয়ে আর এক ছেলের দায়িত্ব পালন করার সময় আবারও সেই স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করেন স্বামী। ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন চককালিকা পুর কারিগরি স্কুলে। নবম শ্রেণিতে উঠতেই স্বামীর অকাল মৃত্যুতে আবারও ভেঙে যায় সেই স্বপ্ন। পরে ছেলে-মেয়ের অনুরোধে আবারও পড়ালেখা শুরু করেন হাসি।
ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলার চামারী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য লিপি আক্তার হাসি বলেন, ২০২৩ সালে ড্রেস মেকিং ট্রেড থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি আশা ছিল এ প্লাস পাওয়ার তার পরেও ৪.৫৪ পয়েন্ট পেয়ে আমি অনেক খুশি।
বড় মেয়ে লিমা খাতুন এসএসসি পাস করে কলেজে আর ছোট মেয়ে লিজা খাতুন নবম শ্রেণিতে। ছেলে লিয়াকত হোসেন গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে এ প্লাস পেলেও মায়ের রেজাল্টে অনেক বেশি খুশি।
ছেলে লিয়াকত হোসেন বলেন, আমাদের মানুষ করতে মা অনেক পরিশ্রম করেন পাশাপাশি পড়া লেখা করে পাস করেছেন। আমরা সন্তান হিসেবে মায়ের এমন সাফল্যে বেশি গর্বিত।
লিপি আক্তার বলেন, আমিও ছেলের সঙ্গে পাস করতে পেরে খুব আনন্দিত। তবে স্বামী বেঁচে থাকলে বেশি খুশি হতেন। আগামীতে সন্তানদের পাশাপাশি আমিও পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চাই।
সোনাপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, লিপির এমন সাফল্য এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আমরা এলাকার পক্ষ থেকে তার ভবিষ্যতের জন্য উজ্জ্বল সফলতা কামনা করি।