সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন
যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। তিনি বলেছেন, আমরা চীনের সঙ্গে কোনো ধরণের সংঘাতে জড়াতে চাই না। সোমবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের গ্রেট হলে প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বৈঠকের শুরুতে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শুভেচ্ছা পৌছে দেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন মনে করেন নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সমুন্নত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের অবশ্যম্ভাবী দায়িত্ব রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং সারা বিশ্বের স্বার্থেই এ সুসম্পর্ক বজায় রাখা প্রয়োজন। খবর সিনহুয়া, বিবিসি, আল-জাজিরার।
ব্লিংকেন বলেন, বালিতে দুই প্রেসিডেন্ট যে ‘অ্যাজেন্ডা’ নির্ধারণ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সেই অ্যাজেন্ডায় ফিরে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সেগুলোর পাশেই রয়েছে।
বাইডেনের এসব প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে: যুক্তরাষ্ট্র শীতল যুদ্ধে জড়াতে চায় না; চীনের সিস্টেমে কোনো ধরণের পরিবর্তন চায় না; এর জোটের লক্ষ্য কখনোই চীন নয়; ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতায় এর সমর্থন নেই এবং চীনের সঙ্গে কোনো সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়াতে আগ্রহী নয়। অর্থাৎ এক চীন নীতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অবস্থান এখনো অটুট রয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ অব্যাহত রাখার আশা করছে। যোগাযোগ, মতবিরোধ দূর করা, সংলাপ চালুসহ নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে দুই পক্ষ কাজ করবে বলে তিনি আশা করেন।
বৈঠকে প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং বলেন, সারাবিশ্বে উন্নয়ণ হচ্ছে আর সেই সঙ্গে সময়ও পালটাচ্ছে। এ অবস্থায় বিশ্বের প্রয়োজনে চীন-মাকিন সম্পর্ক স্থিতিশীল থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, দুই পক্ষের জনগণেরই আরো উন্নত জীবনের প্রত্যাশা করার অধিকার রয়েছে। দুই দেশের সাধারণ স্বার্থকে মূল্যায়ণ করা উচিৎ। প্রত্যেকের অগ্রগতি অন্যের জন্য হুমকি নয়, বরং এটি একটি সুযোগ।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক দায়িত্বের বিষয়টি মাথায় রেখে সারাবিশ্বের জনতার জন্য দুদেশের এক সঙ্গে কাজ করা উচিৎ। এভাবেই বিশ্ব শান্তি এবং উন্নয়নে দুই দেশ ভূমিকা রাখতে পারে এবং বিশ্বকে সহযোগিতা করতে পারে।
সি চিনপিং বলেন, চীন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে শ্রদ্ধা করে। সেখানে কোনো পরিবর্তন বা চ্যালেঞ্জ চীন চায় না। একই ভাবে যুক্তরাষ্ট্রেরও চীনকে সম্মান করা উচিৎ। চীনের অধিকার এবং স্বার্থে আঘাত করে এমন কোনো কাজ তাদের করা উচিৎ নয়।
বালিতে দুই দেশের প্রেসিডেন্ট যে সব বিষয়ে ঐক্যমতে উপনীত হয়েছিলেন দুই পক্ষেরই তাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা উচিৎ বলে সি চিনপিং উল্লেখ করেন।
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে প্রায় ৩০ মিনিট বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে তাইওয়ান বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, এ বিষয়ে নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমরা তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করি না।
তবে তাইওয়ান প্রণালিতে চীনের ‘উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের’ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ তিনি প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের কাছে তুলে ধরেছেন বলে জানান। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট সির সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের রাশিয়ার ‘আগ্রাসনমূলক যুদ্ধ’সহ বিশ্বের নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্লিংকেন বলেন, চীন রাশিয়াকে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেবে না। সম্প্রতি শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অন্য দেশকেও এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। তিনি বলেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিশ্রুতি, একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি। এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো কিছু এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
