শিরোনাম

যুদ্ধের প্রভাবে রাশিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে ধস

সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে : রবিবার, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩ ১:৫৮:৫৩ অপরাহ্ণ

যুদ্ধের প্রভাবে রাশিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে ধস নেমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে আয় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে দেশটিতে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর সর্বশেষ তথ্য বলছে, গত অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি প্রান্তিকে রাশিয়ায় ৪৫৮ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এটি কমে ২৪৭ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, সাত মাসে রপ্তানি কমেছে ৪৬ শতাংশ পয়েন্ট, যা টাকার অঙ্কে প্রায় ২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা (২১১ দশমিক ১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। রপ্তানি আয়ের শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতেও রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে। এর মধ্যে চীন ছাড়া বাকি দেশগুলোতে রপ্তানি কমার কারণ হিসেবে যুদ্ধের প্রভাবকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইপিবির কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর বেশ কয়েকটি ধাপে নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মিত্র দেশগুলো। এতে দেশটির সঙ্গে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক লেনদেনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি ব্যাংকিং সংযোগ না থাকার কারণে এতদিন পোল্যান্ড, তুরস্কের মতো তৃতীয় দেশের সহযোগিতায় বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি হতো। যুদ্ধের কারণে তৃতীয় দেশ ব্যবহার করেও পণ্য রপ্তানি হ্রাস পায়। এসব কারণেই রাশিয়ায় রপ্তানি কমে গেছে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।

শুল্ক সুবিধার পরও রপ্তানি বাড়েনি চীনে : প্রায় ৯৮ শতাংশ পণ্যে শুল্ক সুবিধা দেওয়ার পরও চীনে রপ্তানি বাড়েনি। ইপিবির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের সাত মাসে দেশটিতে ৩৭০ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে অর্জিত রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৪২৬ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার। প্রায় ১৩ শতাংশ পয়েন্ট রপ্তানি কমেছে বাংলাদেশের। তবে চীনে রপ্তানি কমে যাওয়ার পেছনে যুদ্ধের প্রভাব দেখছেন না ইপিবি সংশ্লিষ্টরা। কর্মকর্তারা বলছেন, দেশটিতে করোনা মহামারির প্রভাব দীর্ঘ হওয়ায় দফায় দফায় লকডাউন বাড়ানোর কারণেই মূলত রপ্তানি আয় কমেছে। এ ছাড়া পোল্যান্ডের ১৭ শতাংশ পয়েন্ট এবং আরব আমিরাতের প্রায় ১০ শতাংশ পয়েন্ট রপ্তানি আয় কমেছে।

মূল্যস্ফীতির কারণে পোশাক কম কিনছেন মার্কিন ক্রেতারা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমার কারণ হিসেবে অবশ্য বাড়তি মূল্যস্ফীতিকেই দোষছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এই মূল্যস্ফীতি যে যুদ্ধের ‘বাইপ্রোডাক্ট’ সেটিও বলছেন ইপিবির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানির দাম বেড়েছে। মূলত যুদ্ধের কারণেই সারা বিশ্বে জ্বালানির দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ব্যয় সমন্বয় করতে আমেরিকার ভোক্তারা তৈরি পোশাক কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছেন। এতেই বাংলাদেশের রপ্তানি আয় কমছে। চলতি অর্থবছরের সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫ হাজার ৭২১ মিলিয়ন ডলার প্রায়, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয়ের চেয়ে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার বা ২ দশমিক ২৯ শতাংশ পয়েন্ট কম।

জাপান কোরিয়া অস্ট্রেলিয়া কানাডায় রপ্তানি বাড়ছে : নতুন গন্তব্য হিসেবে অস্ট্রেলিয়া, কানাডার মতো উন্নত দেশগুলোতে রপ্তানি আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আয় বেড়েছে এশিয়ার জাপান, কোরিয়া, ভারতের মতো দেশগুলোতেও। ইপিবির তথ্যানুযায়ী, আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে জাপানে ৪২ দশমিক ৩২ শতাংশ, কোরিয়ায় ৩৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ২৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ, কানাডায় ১৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং ভারতে ১১ শতাংশ পয়েন্ট রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি ইতালিতে : যুদ্ধের পরও ইউরোপের দেশগুলোতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেড়ে চলেছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ইতালিতে। দেশটিতে গত সাত মাসে রপ্তানি আয়ে সর্বাধিক ৫৫ দশমিক ০৪ শতাংশ পয়েন্ট প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি প্রান্তিকে ইতালিতে ১ হাজার ৪২৬ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে বাংলাদেশ থেকে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫০৬ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন বেশি।

আরও পড়ুনঃ

তুরস্কে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের এক মিনিটের মধ্যে আটটি আফটার শক (পরাঘাত) আঘাত হানে
ভূমিকম্পের পর সিরিয়ার উত্তরপশ্চিম অঞ্চলকে দুর্যোগ অঞ্চল’ ঘোষণা করেছে বেসামরিক কর্তৃপক্ষ
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাপর পরও দেদারছে রাশিয়ার তেল কিনছে ভারত
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে হত্যা করবেন না বলেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিড...
পাঁচ কেজি ওজনের বালিশ মিষ্টির দাম ১ হাজার ৮০০ টাকা
ধর্ষনের অভিযোগে রনি হোসেন নামে এক যুবক বিদেশে পালানোর সময় গ্রেফতার
পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মোশাররফ মারা গেছেন
ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র যত বেশি অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করবে, রাশিয়া তত বেশি প্রতিশোধমূলক হামলা চালাব...
Spread the love
Facebook Comments

Contact Us