১৯৮৮ সালে ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক ব্রিটিশ সালমান রুশদির ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে কেটে গেছে তিন দশকের বেশি। রুশদির আলোচিত সেই বইটি প্রকাশ হওয়ার পর যে উত্তাল সময় গেছে তা বর্তমান প্রজন্মের অনেকের জন্মের আগের ঘটনা। এমনকি সালমান রুশদির ওপর হামলাকারী হাদি মাতারের জন্মও রুশদির ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশিত হওয়ার অন্তত বছর দশেক পর।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের হাতে আটক হামলাকারী হাদি মাতার নিউ জার্সির একজন বাসিন্দা। তার বয়স ২৪ বছর।
পুলিশ এই হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি। হামলাকারী হাদি মাতারের আগের রেকর্ড জানতে এবং হামলার উদ্দেশ্য বের করতে ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) সহায়তা চেয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
এনবিসি নিউইয়র্কের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একজন সদস্য জানিয়েছেন, হামলাকারী ইরানি শাসকগোষ্ঠীর সমর্থক ও শিয়া অনুসারী।
যদিও হাদি মাতারের সঙ্গে ইরানের বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি) বাহিনীর কোনো সংযোগ পাওয়া যায়নি। তার নামে ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল।
এদিকে, ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা খোমেনি একটি ফতোয়া জারি করেন। ওই ফতোয়ায় শুধু রুশদি নন, বইটি প্রকাশের সঙ্গে জড়িত সবার মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা হয়। ওই ইস্যুতে ইরান ব্রিটেনের সঙ্গে সম্পর্কও ছিন্ন করে।
তবে ১৯৯৭ সালে সংস্কারপন্থী ইরানি পশ্চিমা বিশ্ব ও ব্রিটেনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট সাইয়িদ মোহাম্মদ খাতামি ক্ষমতা গ্রহণ করে তিনি আর সক্রিয়ভাবে রুশদির উপর ফতোয়া কার্যকর করার চেষ্টা করবেন না বা তাকে হত্যা করার জন্য কাউকে উৎসাহিত করবেন না বলে ইঙ্গিত দেন। বছর কয়েক আগেই তেহরান ঘোষণা করেছিল, ধর্মদ্রোহের অভিযোগে রুশদির বিরুদ্ধে জারি হওয়া মৃত্যু পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
তবে সেই ‘মৃত্যু পরোয়ানা’ যে সাড়ে তিন দশক পরেও জারি ছিল, শুক্রবার সেটার প্রমাণই মিলল নিউ ইয়র্কের শতকা ইন্সটিটিউশনের মঞ্চে। আর হামলাকারী ২৪ বছরের হাদি মাতারের জন্ম ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশিত হওয়ার প্রায় এক দশক পরে!
Facebook Comments