ট্রেন আসার আগে রেল ক্রসিংয়ের নিরাপত্তা গেটে নামিয়ে দেয়ায় গেটম্যানকে মারধরের অভিযোগে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএিনও) কাউসার আজিজের বিরুদ্ধে জিআরপি থানায় মামলা হয়েছে।
পুলিশ মামলার এজাহার গ্রহণ করে এফআইআর করতে আদালতের অনুমতি চেয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ নভেম্বর দুপুরে কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি নামক স্থানে গেটম্যান সিফরাত হোসেন দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এসময় চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনটি ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন থেকে আসার সংকেত পেয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে ছয়সূতি-কুলিয়ারচর এলাকার মধ্যবর্তী নিরাপত্তা গেট নামিয়ে দেন গেটম্যান।
এতে সাময়িক সময়ের জন্য সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় অন্যান্য যানবাহনের সঙ্গে কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িটি আটকা পড়ে।
এসময় ইউএনও এবং তার চালক গাড়ি থেকে থেমে গেটম্যানকে বকাবকি শুরু করেন। তখন সিফরাত ইউএনওকে দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দেন এবং বলেন গাড়ি আসার সংকেত পেয়ে নিরাপত্তা গেট নামিয়েছেন।
একথা বলার পরও ইউএনও গেটটি খুলে দিতে বলেন। তখন গেটম্যান নিরাপত্তা গেট না তোলায় ইউএনও কাউসার আজিজ ও তার চালক তার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।
এক পর্যায়ে ইউএনও গেটম্যান সিফরাতকে গালিগালাজ ও মারধর করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ভৈরব অফিসের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী জিসান দত্ত যুগান্তরকে জানান, একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হয়ে তিনি গেটম্যানকে গালিগালাজ ও মারধর করতে পারেন না। ঘটনার দিন ইউএনও যাওয়ার জন্য গেটটি খুললে যদি ট্রেন দুর্ঘটনা হতো তবে এর দায়িত্ব তিনি নিতেন না। ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পর আমি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। পরে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেলওয়ে থানায় অভিযোগ দেয়া হয়।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি মো. ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস যুগান্তরকে জানান, ঘটনার বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তিনি দায়িত্বশীল একজন সরকারি কর্মকর্তা। তাই অভিযোগটি কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। অনুমতি দিলে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আজিজ যুগান্তরকে বলেন, ঘটনার দিন ট্রেন আসার অনেক আগেই নিরাপত্তা গেট নামিয়ে দেয় গেটম্যান। আমি জানতে পারি ট্রেনটি দূরের স্টেশন ছয়সূতিতে থামিয়ে রেখেছে। দিনটি শুক্রবার থাকায় আমিসহ জুম্মার নামাজ পড়তে অনেক মুসল্লি মসজিদে যেতে সড়কে আটকা পড়েন।
এসময় তাকে ট্রেন কোথায় জিজ্ঞাসা করলে গেটম্যান রেগে যায়। এ নিয়ে আমি তাকে বকা দিয়েছি কিন্ত মারধর করিনি বলে দাবি করেন ইউএনও।
Facebook Comments