আগামী ২৮ অক্টোবরের মধ্যে সরকারকে ক্ষমতা ছাড়ার আলটিমেটাম দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। অন্যথায় হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকারবিরোধী জোটটির নেতারা৷
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রুপান্তরের এক দফা’ দাবিতে গণসমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে বক্তারা আগামী ২৮ অক্টোবরের মধ্যে সরকার পদত্যাগ না করলে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানান। এ সময় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন নেতারা।
বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, তখন সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক এক প্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।শাপলা চত্বরের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে- এ কথার মধ্য দিয়ে তিনি শাপলা চত্বরে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের স্বীকৃতি দিয়েছেন। সরকার বলছে দুই-একটা দল নির্বাচনে না আসলে কিছুই আসে যায় না। আমরা বলতে চাই, আরেকবার ১৪ বা ১৮ সালের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। গতকাল (মঙ্গলবার) তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, সরকারকে নাকি পাহারা দিয়ে রাখতে হবে। কেন! গত ১৫ বছরে কত অন্যায় করেছেন, ব্যাংক লুট করেছেন, মানুষের হক কেড়ে নিয়েছেন৷ হাজার হাজার মানুষের হক নষ্ট করেছেন। এজন্যই কি পাহারা বসাতে হবে৷ কোনো পহারা দিয়ে সরকারকে রক্ষা করা যাবে না।’
‘সরকারি দল শান্তি সমাবেশের নামে উসকানি দিচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে চলবে না। আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশকে দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ দিবে না। সরকার বাংলাদেশকে শ্রীলংকার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা এখনও বিক্ষোভে যায়নি, হরতাল-অবরোধে যায়নি। সরকার পদত্যাগ না করলে হরতাল অবরোধ মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে৷ আমরা আখেরি লড়াইয়ের মধ্যে আছি।’
নগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলেছেন- বিরোধী দলকে নাকি রাস্তা দখল করতে দিবেন না। আমি বলি কি পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে৷ উনাদেরও তাই হয়েছে৷ আমরা যে সমাবেশ করছি রাস্তা কি দখল আছে! গত ১৫ বছরের শাসনে এই সরকার দেশকে জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছে। ওরা বলে, দেশ নাকি জান্নাত৷ এক লোক একা এক রাতে ২২ হাজার কোটি টাকা ঋণ পায়, তার জন্য তো এই দেশ বেহেশত৷ কিন্তু আমাদের জন্য এখানে দোযখ।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সরকারকে আমরা সময় দিচ্ছি আপনারা মন স্থির করেন। কিভাবে আপনারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করবেন। আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমস্ত বিরোধী দলগুলো মহাসমাবেশ করবে। ১৯৯৬ সালে বিএনপি যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ করে ক্ষমতা ছেড়েছিল আপনারাও সেই প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে পারেন।
সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়৷ বিক্ষোভে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।