পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পুলিশের তাড়ায় তিনতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে হালিম মৃধা (৪৫) নামে এক ঠিকাদার নিহত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সবুজনগর মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।
টাকা দেনা-পাওনা নিয়ে আদালতে দায়ের করা একটি মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালায় পুলিশ।
নিহত ওই ঠিকাদার মঠবাড়িয়া পৌরশহরের সবুজনগর মহল্লার আব্দুল মন্নান মৃধার ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক।
সরেজমিন জানা গেছে, ঠিকাদার হালিম মৃধার সঙ্গে অপর এক ঠিকাদার মো. নূরুজ্জামানের টাকাপয়সা লেনদেন নিয়ে বিরোধ ছিল। এ ঘটনায় ঠিকাদার নূরুজ্জামান আদালতে ঠিকাদার হালিম মৃধার বিরুদ্ধে সম্প্রতি একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
মঠবাড়িয়া থানার পুলিশ বুধবার দিনগত রাত ১টার দিকে আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চালায়। এ সময় হালিম একই মহল্লায় বসবাসরত আপন বোন রুমি বেগমের বাসায় অবস্থান করছিলেন। পুলিশ গোপনে সংবাদ পেয়ে সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঠিকাদার হালিম তিনতলা ভবনের ছাদে উঠে যায়। পুলিশও ভবনের ছাদের দিকে তাকে তাড়া করে। এরপর কি ঘটেছে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
তবে নিহত ঠিকাদার হালিম মৃধার মেজো ভাই মামুন মৃধা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ রাত দেড়টার দিকে আমার বাসায় এসে আমাকে জোর জবরদস্তি করে বলে, আপনার বোনের বাসার পেছনে কি যেন পড়ার শব্দ হইছে দ্রুত চলেন। এক প্রকার টেনেহিঁচড়ে পুলিশ আমাকে বোনের বাসার সামনে নিয়ে যায়। এ সময় ভবন থেকে নূরুজ্জামান তালুকদার ও অপরিচিত দুই ব্যক্তিকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখি। পুলিশ আমাকে ভবনের পেছনে নিয়ে যায়। সেখানে বেড়ের (নালা) ভেতর ভাইয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখি। এ সময় ভাইয়ের হাত-পা ভাঙা ও মুখমণ্ডলে রক্ত জখম দেখে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।
তিনি বলেন, আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে তাড়া করে তিনতলা ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ হতে একটি হত্যা মামলা দায়েরের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।
মঠবাড়িয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, মৃত ঠিকাদারের লাশ ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃত ঠিকাদারের নামে দুইটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।